রাজধানীর শাজাহানপুরে এলোপাতাড়ি গুলিতে নিহত মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপু ও কলেজছাত্রী সামিয়া আফরান প্রীতি হত্যা মামলায় মো. খায়রুল আলম ওরফে খায়রুলকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের শুনানি নিয়ে বুধবার (১৯ অক্টোবর) আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এ আদেশ দেন।

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জান্নাতুল ফেরদৌস (রূপা)। এর আগে গত ১৭ অক্টোবর মো. খায়রুল আলম ওরফে খায়রুলকে জামিন দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট এ কে এম ফয়েজ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এম এ কামরুল হাসান খান (আসলাম)।

গত ৩০ জুলাই রাতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে খায়রুলসহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাদের রিমান্ডে নেওয়া হয়। রিমান্ড শেষে গত ৩ আগস্ট ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশীদ তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। খায়রুল ছাড়া বাকিরা হলেন- জাতীয় পার্টির (জাপা) নেতা জুবের আলম খান রবিন, আওয়ামী লীগ নেতা মাহবুবুর রহমান টিটু ও আরিফুর রহমান সোহেল।

টিপু ও প্রীতি হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার শুটার মাসুম মোহাম্মদ ওরফে আকাশের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে মূল পরিকল্পনাকারী ও সমন্বয়কারী হিসেবে মুসার নাম আসে। পরে জানা যায়, মুসা ঘটনার আগেই গত ১২ মার্চ দেশ ছেড়ে সংযুক্ত আরব আমিরাত চলে যান। পুলিশ সদর দপ্তর গত ৮ এপ্রিল মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে ইন্টারপোলের মাধ্যমে যোগাযোগ শুরু করে।

ইন্টারপোলের মাধ্যমে মুসাকে দেশে ফেরানোর পর একাধিক দফায় হেফাজতে নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এরপর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেন মুসা। কিলিং মিশনে কার কী ভূমিকা ছিল সেটি তার বক্তব্যে উঠে আসে। মুসার তথ্য যাচাই করতে বিভিন্ন সময় আরও কয়েকজনকে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে ডিবি। এর মধ্যে টিপু হত্যা পরিকল্পনায় টিটু, রবিন ও সোহেল সম্পৃক্ততার প্রমাণ মিলে। চারজনের মধ্যে টিটু সবচেয়ে দুর্ধর্ষ। আসামিদের সঙ্গে অপরাধ জগতের যোগসূত্র দীর্ঘদিনের। যুবলীগ নেতা রিয়াজুল হক খান মিল্ক্কীর সঙ্গে এক সময় তার ঘনিষ্ঠতা ছিল।

এ ঘটনায় টিপুর স্ত্রী ফারজানা ইসলাম ডলি মামলা দায়ের করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করা হয়। পরে বিভিন্ন সময় আসামিদের গ্রেফতার করা হয়।